আমাদের বাড়িতে চিনি ও মধুর দাদাকে সাথে নিয়ে একটা আসর বসে। গল্প পাঠের আসর। এ আসর বসে সপ্তাহে দুইদিন। শুক্রবার ও শনিবার। দাদা বই পড়ে গল্প শোনান। গল্প পাঠ শেষ হলে চিনি ও মধু নিজেদের মতো করে গল্পটি বলে। বলার কায়দাটা বেশ আনুষ্ঠানিক হয়। ওরা দাঁড়িয়ে নিজেদের পরিচয় দেয়, গল্পের নাম বলে এরপর গল্প বলা শুরু করে। গল্প বলা শেষ হলে দাদা সেরা গল্পকার নির্বাচন করেন। পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় ডিম-চকলেট। শুরুতে এদের লোভ ছিল ডিম চকলেটের প্রতি তাই গল্প শুনতে ও বলতে চাইতো। এখন ওরা নিজেরাই গল্প শুনতে ও বলতে পছন্দ করে। এটা এখন ওদের অভ্যাসের মতো হয়েছে। ওদের গল্প তৈরি করার দক্ষতা বাড়ছে, নতুন নতুন শব্দ শিখছে, কথা গুছিয়ে বলতে চেষ্টা করছে, শোনার আগ্রহ বাড়ছে, গল্প উপস্থাপন করা শিখছে। সবচাইতে বড় বিষয় হল দাদার সাথে একটা দারুণ বন্ধন তৈরি হচ্ছে গল্প পাঠের মধ্য দিয়ে। আমাদের বাড়িতে যারা সিনিয়র সিটিজেন আছেন তারা পরিবারের ছায়া। এটা শিশুদের বোঝানোর জন্য এর চাইতে ভালো মাধ্যম আর কি থাকতে পারে? আর কতভালোভাবে সময় কেটে যায়! আর মা হিসেবে আমিও নিজের কাজগুলো করার জন্য একটু সময় পাই। এটা আসলে অন্য অর্থে সন্তান লালনের ক্ষেত্রে দায়িত্ব ভাগ করে নেয়া।